প্রশ্ন-উত্তর

কিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ক কিছু প্রশ্ন ও উত্তর


১. প্রশ্নঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা কি কাজ করেন?

উত্তরঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা মূলতঃ মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবি, তারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করেন যেমনঃ
ক. মনোবৈজ্ঞানিক পরিমাপন, যেমন- বুদ্ধি, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি পরিমাপ করা।
খ. মানসিক রোগের মনোবৈজ্ঞানিক 
চিকিৎসা দেয়া যা সাইকোথেরাপি বা কাউন্সেলিং নামে পরিচিত। এটি কথার মাধ্যমে করা হয়।
গ. মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিণ দেয়া।
ঘ. মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিভিন্ন ধরণের গবেষণা করা।
ঙ. মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বিষয়ে জাতীয় নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পালন করা।


২. প্রশ্নঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট কাকে বলে?

উত্তরঃ বাংলাদেশের 
ক্ষেত্রে কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তারা যারা মনোবিজ্ঞানে বিএসসি (সম্মান) ও কিনিক্যাল কাইকোলজিতে এমএসসি/এমএস এবং এম ফিল ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে কিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিনিক্যাল সাইকোলজির একমাত্র প্রশিণ কোর্স রয়েছে। এছাড়াও বিদেশে কিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে বিভিন্ন মেয়াদী প্রশিণ কোর্স আছে। কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় চিকিৎসা করে থাকেন।


৩. প্রশ্নঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের কাছে সার্ভিস নিতে কত টাকা লাগে?

উত্তরঃ সরকারী প্রতিষ্ঠানে আউটডোরের টিকেট কেটে কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট দেখানো যায়। এই টিকেটের মূল্য আসলে খুবই নগণ্য। স্বায়ত্ব শাসিত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এবং প্রাইভেট হসপিটালে প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত ফিস জমা দিয়ে সাইকোলজিস্ট দেখাতে হয়। কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসও করেন। এেেত্র বিভিন্ন কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট বিভিন্ন মাত্রায় চার্জ নির্ধারণ করেন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেবার সময়ে আপনি নির্ধাতি চার্জ কত তা জেনে নিন।




৪. প্রশ্নঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াটিস্টের মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তরঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তারা যারা মনোবিজ্ঞানে বিএসসি (সম্মান) ও কিনিক্যাল সাইকোলজিতে এমএসসি/এমএস এবং এম ফিল ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোজ্ঞিান বিভাগে কিনিক্যাল সাইকোলজি পড়ানো হয়। এছাড়াও বিদেশে কিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে বিভিন্ন মেয়াদী প্রশিণ কোর্স আছে। কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা করে থাকেন। অন্যদিকে সাইকিয়াট্রিস্ট হলেন মানসিক রোগের ডাক্তার। এমবিবিএস পাশ করার পর তারা মানসিক বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। আমাদের দেশে সাইকিয়াট্রিতে ডিপিএম, এফসিপিএস, এমডি এবং এম ফিল ডিগ্রী দেয়া হয়। সাইকিয়াট্রিস্টরা ঔষধ প্রদানের মাধ্যমে মানসিক রুগীদের চিকিৎসা প্রদান করেন। অন্যদিকে সাইকোলজিস্টরা কোন ঔষধ প্রয়োগ করেন না। তারা কথার মাধ্যমে (কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপি) চিকিৎসা করেন।




৫. প্রশ্নঃ মানসিক রোগ চিকিৎসায় ভাল হয় কিনা?

উত্তরঃ মানসিক রোগ চিকিৎসায় ভাল হয়। কিছু কিছু জটিল রোগ ভাল না হলেও ঔষধ প্রদানের মাধ্যমে অনেকটা রোগের নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।




৬. প্রশ্নঃ কথার মাধ্যমে মানসিক রোগ কিভাবে ভাল হয়?

উত্তরঃ কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা মূলত সাইকোথেরাপি দিয়ে থাকেন। তারা কথার ও যুক্তির মাধ্যমে ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি ও আচরনের পরিবর্তন করেন। ফলে মানসিক সমস্যা নিরাময় হয়। এছাড়া দতা প্রশিণ দিয়ে তারা মানুষের জীবন দতার উন্নয়ণ ঘটান। যেমন, সামাজিক দতা প্রশিণ, সমস্যার সমাধানের দতা প্রশিন দেয়া ইত্যাদি।




৭. প্রশ্নঃকোন কোন রোগের 
ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি দিতে হবে?

উত্তরঃ অনেক ধরণের মানসিক সমস্যার 
ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি ভূমিকা রাখতে পারে। তবে হতাশা, অমূলক ভীতি, আতঙ্কজনিত বিকৃতি, সাধারনীকৃত উদ্বেগজনিত বিকৃতি, অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজর্ডার, অতিরিক্ত রাগ, উদ্বিগ্নতা, মনোযৌন সমস্যা, দাম্পত্য সমস্যা, শিশুদের বিভিন্ন সমস্যায় এই চিকিৎসা বিশেষভাবে ভূমিকা রাখতে পারে।




৮. প্রশ্নঃ কোথায় সাইকোথেরাপি পাওয়া যায়?

উত্তরঃ বর্তমানে নিচের প্রতিষ্ঠান গুলোতে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানীরা সেবা প্রদান করছেন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ (কলা ভবন), ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান কেন্দ্র (টিএসসি), রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল এবং বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে সাইকোথেরাপি পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা যে কোন কার্য দিবসে অফিস এবং হলের নির্দিষ্ট সময়ে এসে যোগাযোগ করতে পারেন।


মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ, ব্লক ডি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনির্ভার্সিটি, শাহবাগ, ঢাকায় সাইকোথেরাপি পাওয়া যায়। প্রথমে হাসপাতালের বহিঃবিভাগে দেখিয়ে রেফার করে তারপর সাইকোথেরাপি নিতে হয়। এই হাসপাতালে গ্রুপ ও ব্যক্তি পর্যায়ে সাইকোথেরাপি দেয়া হয়।


জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শেরে বাংলা নগর, ঢাকায় (শ্যামলী শিশু মেলার পাশে) সাইকোথেরাপি দেয়া হয়। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে দলীয় এবং ব্যক্তিপর্যায়ে সাইকোথেরাপি দেয়া হয়। এখানে বৈবাহিক সমস্যার মোকাবিলার জন্য ‘ম্যারিটাল থেরাপি’ এবং পারিবারিক সমস্যা কমানোর জন্য ‘ফ্যামিলি থেরাপি’ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এই ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন ধরণের মনোবৈজ্ঞানিক পারিমাপনও করা হয়। যেমন, এখানে বুদ্ধি, স্মৃতি শক্তি, ব্যক্তিত্ব, সমস্যামূলক আচরণ, বিভিন্ন ধরণের মানসিক সমস্যার মাত্রা কতটুকু আছে ইত্যাদি পরিমাপ করা হয়। ইনস্টিটিউটে মানসিক সমস্যাগ্রস্থ শিশু রোগীদের জন্য ‘শিশু বিকাশ কেন্দ্র’ নামের বিশেষিত চিকিৎসা সেবা আছে। বিশেষ করে সাইকোথেরাপির সাহায্য শিশু রোগীদের জীবনের মান অনেকটা উন্নত করা সম্ভব হয়।


মানসিক হাসপাতাল, পাবনায় সাইকোথেরাপি পাওয়া যায়।


ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারে (৩৭/৩ ইস্কাটন গার্ডেন রোড, ঢাকা) সাইকোথেরাপি পাওয়া যায়। যে কোন মহিলা ও শিশু সাহায্যের জন্য যে কোন কার্য দিবসে অফিস সময়ে এসে যোগাযোগ করতে পারবেন।


শিশু বিকাশ কেন্দ্রে (বরিশাল মেডিকেল কলেজ, বরিশাল) মনোবৈজ্ঞানিক পরিমাপন ও সাইকোথেরাপি পাওয়া যায়। ঢাকার শিশু হাসপাতালের শিশু বিকাশ কেন্দ্রে বিভিন্ন ধরণের মনোবৈজ্ঞানিক পরিমাপন করা হয়। এছাড়া এখানে শিশুদের মানসিক সমস্যার জন্য কাউন্সেলিংও করা হয়।


জাগরীতে (আই সি ডি ডি আর, বি, মহাখালী, ঢাকা) কাউন্সেলিং সহ এইচআইভি পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে।


ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে (বড় মগবাজার, ওয়ারলেস রেল গেট) সাইকোথেরাপি দেয়া হয়।


এছাড়াও চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানীগণ ব্যক্তিগতভাবে সাইকোথেরাপি প্রদান করে থাকেন।


৯. প্রশ্নঃ বাংলাদেশে কিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির (বিসিপিএস) মেম্বার হওয়ার প্রক্রিয়া কি?

উত্তরঃ 
www.bcps.org.bd ওয়েব সাইটে বাংলাদেশ কিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সদস্য পদের আবেদন করার ফরম দেয়া আছে। এই ফরম ডাউন লোড করে পূরন করে, প্রিন্ট করে, signature করে এরপর বিসিপিএস-এ পূরণকৃত ফরমটি পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ (কলা ভবনের ৫তলা) হতে Bcps এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কাজেই সেখানকার কোন শিক্ষকেকের কাছে আবেদন পত্র পাঠানো যেতে পারে। অথবা বিসিপিএস-এর ই-মেইলে bcps@1999gmail.com পূরণকৃত ফরমটি সাইন করে স্ক্যান করে পাঠাতে পারেন। বিসিপিএস-এর Executive কমিটি সভায় সদস্য পদের আবেদন গৃহীত হলে ইসি কমিটি আপনাকে বাৎসরিক নির্ধারিত ফি কত দিতে হবে তা জানাবে। আপনি আবেদনের ফি এবং বাৎসরিক ফি জমা দিয়ে সদস্য হতে পারবেন। উল্লেখ্য বিসিপিএস-এ জেনারেল মেম্বার হতে হলে কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হতে হবে। তবে বিসিপিএস-এ এফিলিয়েট এবং স্টুডেন্ট মেম্বারশিপের বিধানও আছে। 


১০. প্রশ্নঃ কখন বুঝব আমার সাইকোথেরাপি দরকার?

উত্তরঃ যখন আপনার ভিতর মানসিক চাপ, হতাশা, উদ্বিগ্নতা ইত্যাদি তীব্র ভাবে অনুভূত হবে, এই লণ দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে এবং আপনার সামাজিক, পারিবারিক, ব্যক্তিগত, পেশাগত জীবন বিপর্যস্ত হবে তখন আপনার সাইকোথেরাপি দরকার। তবে সচেতন মানুষেরা লণ অধিক তীব্র হওয়ার আগেও সাইকোথেরাপির মাধ্যমে অসুস্থ্য হওয়ার ঝুকি কমিয়ে থাকেন। এছাড়া লণ তীব্র না হলেও মানসিক ভাবে অসুস্থ্য হওয়ার ঝুকি না থাকলেও জীবনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আপনি কাউন্সেলিং নিতে পারেন।




১১. প্রশ্নঃ বাংলাদেশে মানসিক রোগ কি মাত্রায় আছে?

উত্তরঃ বাংলাদেশে পূর্র্ণ বয়স্ক মানুষের ভিতর ১৬.১ ভাগের এবং শিশুদের ভিতর ১৮.৪ ভাগের মানসিক রোগ আছে।




১২. প্রশ্নঃ কিনিক্যাল সাইকোলজির কোন শর্ট কোর্স আছে কিনা?

উত্তর: না। বাংলাদেশে কোন কিনিক্যাল সাইকোলজির কোন শর্ট কোর্স নেই।


১৩. প্রশ্নঃ কিনিক্যাল সাইকোলজি কোথায় পড়ানো হয়?

উত্তরঃ বাংলাদেশের 
ক্ষেত্রে কিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট তারা যারা মনোবিজ্ঞানে বিএসসি (সম্মান) ও কিনিক্যাল কাইকোলজিতে এমএসসি/এমএস এবং এম ফিল ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ হতে দেশের একমাত্র কিনিক্যাল সাইকোলজি ডিগ্রীটি দেয়া হয়। এছাড়াও বিদেশে কিনিক্যাল সাইকোলজি বিষয়ে বিভিন্ন মেয়াদী প্রশিণ কোর্স আছে। কিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা মনোবিজ্ঞানের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা করে থাকেন।




১৪. প্রশ্নঃ সাইকোথেরাপি কি?

উত্তরঃ সাইকোথেরাপি হল মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি। সাইকোথেরাপিতে সাইকোলজিস্ট পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কায়েন্টের মনের কথা শুনেন। কায়েন্ট তার মনের কথা বলে হালকা হয়ে নিজেই নিজের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তগুলো নেন। প্রয়োজনে সাইকোলজিস্ট কায়েন্টকে বিভিন্ন ধরণের দতা প্রশিণও দেন। যেমন, সামাজিক দতা প্রশিণ, সমস্যার সমাধানের দতা প্রশিণ ইত্যাদি। এছাড়া কায়েন্টের মনের মধ্যে যদি নেতিবাচক চিন্তা বা ধ্যান ধারণা থাকে তবে কথা বলে ও যুক্তির মাধ্যমে পরোভাবে তা সংশোধনের চেষ্টাও সাইকোথেরাপিতে করা হয়। নেতিবাচক চিন্তা কমে গেলে কায়েন্টের মন ভাল হয়ে আসে, তার আচার-আচরণও শারীরিক লণেরও উন্নতি হয়। সাইকোথেরাপি সেশন সচরাচর অন্তুতঃ পঞ্চাশ মিনিট হয়। কখনো কখনো এমনকি এর বেশীও হতে পারে। একটি মাত্র সেশনে কিন্তু কাজ হয়না। সচরাচর সপ্তাহে একটি করে অন্ততঃ আট দশটি সেশন প্রয়োজন হয়। তবে সমস্যা ও ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী বেশিও লাগতে পারে।




১১. প্রশ্নঃ বাংলাদেশে মানসিক রোগ কি মাত্রায় আছে?

উত্তরঃ বাংলাদেশে পূর্র্ণ বয়স্ক মানুষের ভিতর ১৬.১ ভাগের এবং শিশুদের ভিতর ১৮.৪ ভাগের মানসিক রোগ আছে।




১৫. প্রশ্নঃ বাংলাদেশে কোন অ্যাপ্রোচে সাইকোথেরাপি দেওয়া হয়?

উত্তরঃ বাংলাদেশে কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি এপ্রোচে সাইকোথেরাপি দেওয়া হয়। এছাড়াও সীমিতভাবে ট্রানজেকশনাল অ্যানালাইসিস এবং কায়েন্ট সেন্টারড অ্যাপ্রোচেও সাইকোথেরাপি দেয়া হয়। বৈবাহিক সমস্যা সমাধানের জন্য ম্যারিটাল থেরাপি এবং পারিবারিক সমস্যার সমাধানে ফ্যামিলি থেরাপি দেওয়া হয়। এছাড়াও সাইকোটিক রোগী এবং মানসিক প্রতিবন্ধী রোগীরে জন্য সার্পোটিভ সাইকোথেরাপি দেওয়া হয়। 



বাংলাদেশে কিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির web site হতে সংগৃহীত  






বাইপোলার ডিসঅর্ডার 
বাইপোলার ডিসঅর্ডার এক ধরনের গুরুতর আবেগজনিত মানসিক রোগ যাকে দ্বিপ্রান্তিক মানসিক ব্যাধি বলা যেতে পারে। এ অসুখের এক প্রান্তে থাকে ‘ডিপ্রেশন’ বা বিষণœতা এবং অন্য প্রান্তে থাকে ম্যানিয়া। ডিপ্রেশনে মনের আবেগের উদ্দীপনা কম থাকে। মনে বিষণœতা অনুভব হয়। কোনো কাজ ভালো লাগে না। শরীরে ও মনে অবসাদ অনুভব হয় আর অন্যদিকে ম্যানিয়াতে মনের আবেগের উদ্দীপনা অতিরিক্ত অনুভূত হয়। সব কিছু বেশি বেশি ভালো লাগে। মনে অতিরিক্ত উত্তেজনা কাজ করে ইত্যাদি। সাপ্তাহিক প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এমএ হামিদ
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আরিফুর রহমান

সাপ্তাহিক : বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) বলতে কি বোঝায়?ডা. এম.এ হামিদ : বাইপোলার ডিসঅর্ডার এক ধরনের গুরুতর আবেগজনিত মানসিক রোগ যাকে দ্বিপ্রান্তিক মানসিক ব্যাধি বলা যেতে পারে। ‘বাই (Bi) অর্থ হচ্ছে ‘দুই’ আর ‘পোলার (Polar)’ বা পোল হচ্ছে প্রান্ত। এ অসুখের এক প্রান্তে থাকে ‘ডিপ্রেশন’ (Depression) বা বিষণœতা এবং অন্য প্রান্তে থাকে ম্যানিয়া (Mania)। ডিপ্রেশনে মনের আবেগের উদ্দীপনা কম থাকে। মনে বিষণœতা অনুভব হয়। কোনো কাজ ভালো লাগে না। শরীরে ও মনে অবসাদ অনুভব হয় আর অন্যদিকে ম্যানিয়াতে মনের আবেগের উদ্দীপনা অতিরিক্ত অনুভূত হয়। সব কিছু বেশি বেশি ভালো লাগে। মনে অতিরিক্ত উত্তেজনা কাজ করে ইত্যাদি। একই ব্যক্তির যদি এক সময় ম্যানিয়া (Mania)  আর অন্য সময় ডিপ্রেশন (Depression)  হয় তখন তাকে আমরা বাইপোলার ডিসঅর্ডার  বলে থাকি। এ রোগটা এপিসোডিক (episodic) অর্থাৎ রোগীর জীবদ্দশায় মাঝে মাঝে ম্যানিয়া বা ডিপ্রেশনে ভুগতে পারে এবং মাঝখানের সময়টা রোগী সম্পূর্ণ ভালো থাকবে।
সাপ্তাহিক : এ রোগের উপসর্গসমূহ কি কি?ডা. এম.এ হামিদ : আগেই বলেছি এ দ্বিপ্রান্তিক রোগের (Bipolar Disorder) এক প্রান্তে থাকে ডিপ্রেশন (Depression) আর অন্য প্রান্তে ম্যানিয়া (Mania) । আক্রান্ত ব্যক্তি  কখনো ডিপ্রেশন থাকবে আবার পরবর্তীতে তার ম্যানিয়া হতে পারে। ডিপ্রেশনের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে রোগী খুবই বিমর্ষ হয়ে যায়। তার কিছুই ভালো লাগে না। কোনো কিছুতেই আগ্রহ ও আনন্দ পায় না। দৈনন্দিন যত কাজ কর্ম, লোকজনের সঙ্গে কথা বলা তার কাছে কঠিন মনে হয় এবং বিরক্ত লাগে। একসময় তার কথাবার্তা ধীর হয়ে যায়। তার চিন্তাধারাও ধীর হয়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায় রোগী কোনো কথাই বলে না। তার ঘুমের সমস্যা হয়। খুব ভোরে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঘুম ভেঙে যায়। রোগী মাঝে মাঝে খুব অস্থিরবোধ করে। ক্ষুধা কমে যায়, ওজন কমে যায়, জৈবিক আগ্রহ কমে যায়। সারাদিনের মধ্যে সকাল বেলা তার খুবই খারাপ লাগে। মাঝে মাঝে অতীতের ছোটখাটো অপরাধ বড় ধরনের পাপ করেছে বলে বিশ্বাস জন্মে। অনেক সময় বেঁচে থাকা অর্থহীন মনে হয় এবং আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসে। ডিপ্রেশন গভীর হলে কেউ কেউ আত্মহত্যার চেষ্টাও করতে পারে। আর ম্যানিয়ার সময় যে উপসর্গসমূহ দেখা যায় তা বিষণœতার ঠিক উল্টো। রোগীর মনের উদ্দীপনা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। আনন্দ-ফুর্তি অতিরিক্ত মাত্রায় থাকে। কথা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। চিন্তার গতি অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যায় এবং এক চিন্তা শেষ হতে না হতেই আরেক চিন্তা চলে আসে। সে সবসময় কর্মব্যস্ত থাকে। একটা কাজ শেষ হতে না হতেই আরেকটা কাজে জড়িয়ে পড়ে। নিজেকে অন্যদের তুলনায় বড় মনে করে এবং আশপাশের মানুষকে অগ্রাহ্য করে। তার কাজকর্মে বা চিন্তা ধারায় কেউ বাধা দিলে সে সহজেই অনেক বেশী উত্তেজিত হয়ে যায় এবং অনেক সময় আক্রমণও  করে থাকে, এমনকি মেরেও ফেলতে পারে। রোগীর মধ্যে বেশি বেশি খরচ করার প্রবণতা দেখা যায়। তাছাড়া তার যৌন আগ্রহ অতিরিক্ত বেড়ে যায়। ফলে রোগীর মধ্যে অশোভন আচরণ দেখা যেতে পারে। তার ঘুমের পরিমাণ কমে যাবে কিন্তু সে ঘুমের সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ করবে না। কারণ অতিরিক্ত উদ্দীপনা তাতে শারীরিকভাবে ক্লান্ত করবে না। ফলে ঘুমের প্রয়োজনীতা সে মনে করবে না।
সাপ্তাহিক : কি কি কারণে এ রোগ হতে পারে ?ডা. এম.এ হামিদ : অন্যান্য গুরুতর মানসিক রোগের মতো এর কারণও মাল্টিফ্যাকটোরিয়াল। অর্থাৎ নানাধরনের কারণে এ রোগ হওয়ার পেছনে ভূমিকা পালন করে।  বিভিন্ন কারণের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  কারণ হলো  জিনগত ত্র“টি যা বংশগত। অর্থাৎ পরিবার বা  বংশের কোনো সদস্যের এ রোগ হলে অন্য সদস্যের এ রোগ হবার সম্ভাবনা সাধারণ জনগণের চেয়ে অনেকগুণ বেড়ে যায়। আবার মস্তিষ্কের মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ বা নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার কারণেও এ রোগ হতে পারে। এছাড়া মনস্তাত্ত্বিক বা পারিপার্শ্বিক কারণে অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে এ রোগ হতে পারে। অনেকক্ষেত্রে নেশাদ্রব্য গ্রহণেও এ রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায়।
সাপ্তাহিক :   কোন বয়সে এ রোগটি বেশি হয়?
ডা. এম.এ হামিদ : সাধারণত ২০-২৫ বছর বয়সের মধ্যে এরোগ বেশি দেখা যায়। তবে যেকোনো বয়সেই এ রোগ হতে পারে। এমনকি শিশু বয়সেও এ রোগ হতে পারে আবার বয়স্কদের মধ্যেও এ রোগ দেখা দিতে পারে।
সাপ্তাহিক : এ রোগের চিকিৎসা কি?ডা. এম.এ হামিদ : অন্যান্য মানসিক রোগের চিকিৎসার মতো এ রোগের চিকিৎসাও মূলত তিনভাগে ভাগ করা হয়। প্রথমত ওষুধের মাধ্যমে, দ্বিতীয়ত মনস্তাত্ত্বিক ও তৃতীয়ত সামাজিক চিকিৎসা। এর মূল চিকিৎসা হলো ওষুধ। আমাদের মূল উদ্দেশ্য রোগের লক্ষণসমূহ প্রশমিত করা। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন মুড স্ট্যাবিলাইজার (Mood Stabilizers)  যেমন লিথিয়াম, ভ্যালপ্রোয়েট, ল্যামোট্রিজিন দিয়ে চিকিৎসা করি। এছাড়া আরো অন্যান্য ওষুধ দিয়েও চিকিৎসা করে থাকি। এরপর রোগী কিছুটা উন্নত হলে সাইকোলজিক্যাল বা মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি, কাউন্সেলিং ও সাইকো এডুকেশনমূলক চিকিৎসা দেয়া হয়। রোগীর পরিবারবর্গকে এ রোগ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়া হয় এবং রোগী ও তার কাছের মানুষ কিভাবে এ রোগ মোকাবিলা করবে সে ব্যাপারে দক্ষতা অর্জনে তাদের সাহায্য করা। রোগীর উপর বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক চাপ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করা হয়ে থাকে। সামাজিক চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য  হলো রোগীকে পূর্বের পেশায় অথবা  অন্য কোনো পেশায় কর্মক্ষম করে গড়ে তোলা।
সাপ্তাহিক : চিকিৎসার পর কি রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে?
ডা. এম.এ হামিদ : অনেকেরই ধারণা মানসিক রোগ একবার হলে আর ভালো হয় না। বিশেষ করে আমি আর একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক রোগের কথা বলব সেটি হচ্ছে সিজফ্রেনিয়া। সিজফ্রেনিয়া বাইপোলার রোগ থেকে খারাপ। সিজফ্রেনিয়া রোগে যারা ভোগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগের লক্ষণ কিছু না কিছু থেকেই যায়। তার দৈনন্দিন কাজকর্মে স্থায়িভাবে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সে আগের অবস্থায় সহজে ফিরে যেতে পারে না। তবে চিকিৎসা নিয়মিত করলে অনেকটাই সুস্থ থাকে। বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে ম্যানিক ডিসঅর্ডার আর ডিপ্রেশনই হোক সময়মতো চিকিৎসায় কিছুদিন পর রোগী ভালো হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক কাজ-কর্ম আগের মতোই করতে পারে। তাই সিজফ্রেনিয়া থেকে বাইপোলার ডিসঅর্ডার অনেক ক্ষেত্রেই ভালো
সাপ্তাহিক : এ রোগের চিকিৎসার মেয়াদ কত দিন?ডা. এম.এ হামিদ :  বাইপোলার রোগ হলে সাধারণত সারা জীবন চিকিৎসায় থাকতে হয়। তবে প্রথম আক্রান্ত রোগী চিকিৎসায় কমপক্ষে ২ থেকে ৩ বছর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলে ধীরে ধীরে ওষুধ বন্ধ করে পর্যবেক্ষণে রাখা যেতে পারে। 
সাপ্তাহিক : এ রোগ কি প্রতিরোধমূলক?ডা. এম.এ হামিদ : এ রোগের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাবার আগমুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিরোধ করার মতো বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। বংশে কারো এ রোগ থাকলে অন্য সদস্যদের  এ রোগ হবার প্রবণতা সাধারণ জনগণের তুলনায় অনেকগুণ বেড়ে যায়।  শুধুমাত্র একটা কারণই এ রোগ হওয়ার পেছনে কাজ করে না। বিভিন্ন কারণের সমন্বয়েই একজন ব্যক্তির এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। সুতরাং  বংশগত ছাড়া পারিপার্শ্বিক যে কারণসমূহ রয়েছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যায়। তবে একবার এ রোগের প্রকাশ হলে যদি রোগীকে  দ্রুত উপযুক্ত চিকিৎসায় নিয়ে আসা যায়, তখন এ রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রোগে উপসর্গসমূহ উপশমের পর কিছু কিছু কার্যকরী ব্যবস্থা যেমন- নিয়মমাফিক জীবন-যাপন, নির্দিষ্ট সময় ও পরিমাণ মতো ঘুমানো, সামাজিক ও পারিবারিক চাপ কমানো, যেকোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য হতে দূরে থাকলে পুনরায় এই রোগের আক্রমণ হতে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। এছাড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ চালিয়ে যাওয়া এবং নিয়মিত ফলোআপ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।
সাপ্তাহিক : এ রোগের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো কি কি?
ডা. এম.এ হামিদ : এ রোগের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হলো রোগী হঠাৎ করে আত্মহত্যা করতে পারে। বাইপোলার ডিপ্রেশনে থাকাকালীন সময়ে আত্মহত্যার সম্ভাবনা প্রায় ৪০% হতে পারে। ম্যানিক ডিসঅর্ডারেও প্রায় ১০% রোগী আত্মহত্যা করতে পারে। অধিক উত্তেজনার কারণে অনেক সময় কাউকে মেরেও ফেলতে পারে। জিনিসপত্র ভাঙচুর বা অন্য কাউকে শারীরিকভাবে আঘাতও এ রোগের অন্যতম ঝুঁকি। তাছাড়া ম্যানিক রোগগ্রস্ত অবস্থায় অনেকের বেশি টাকা-পয়সা খরচের প্রবণতা বেড়ে যায়Ñএ সময় হঠাৎ করে বিভিন্ন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ করে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। বাইপোলার ডিসঅর্ডারে রোগীর জীবনের একটা বড় কার্যক্ষম সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই রোগী বিভিন্ন সময় নানারকম ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লিপ্ত থাকে এমনকি বহু ধরনের অসামজিক কার্যকলাপে ও অবৈধ যৌনকর্মে আকৃষ্ট হতে পারে।
সাপ্তাহিক : একজন বাইপোলার ডিসঅর্ডারের রোগীর পরিবারের দায়িত্ব কেমন হওয়া উচিত?
ডা. এম.এ হামিদ : অন্যান্য মানসিক রোগের মতোই বাইপোলার ডিসঅর্ডারের রোগীর পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত তাকে অবশ্যই মানসিকভাবে অবিরাম সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। বাইপোলার ডিসঅর্ডারে অনেকক্ষেত্রে রোগীর ব্যবহার এতই উগ্র হয় যে, সে বুঝতেই পারে না সে অসুস্থ। সুতরাং এখানে পরিবারের দায়িত্ব তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া। পরিবারের সদস্যদের বুঝতে হবে রোগীর আচরণসমূহ এ রোগেরই উপসর্গ মাত্র, রোগী এসব অস্বাভাবিক আচরণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।  মনে রাখতে হবে কটূক্তি, তর্ক করা, মারধর করা বা মনে আঘাত দিয়ে কথা বলা, রোগের উপসর্গসমূহকে শুধু বাড়িয়েই তুলবে না বরং বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এছাড়া এসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণসমূহের প্রতি (যেমন পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, বেশি বেশি কথা বলা, চঞ্চলতা, ইত্যাদি) রোগীর আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে। এ রোগের প্রথম দিকে রোগী মনেই করে না সে অসুস্থ। তাই ওষুধ খাওয়ানোর প্রাথমিক দায়িত্ব বর্তায় পরিবারের সদস্যদের। আর শুধু পরিবারই নয়, সমাজের  অন্যান্য মানুষেরও এই ধরনের রোগীদের সহানুভূতি সহকারে দেখাশোনা করার দায়িত্ব রয়েছে। মনে রাখতে হবে যে কোনো মানুষেরই এ রোগ হতে পারে। সুতরাং সার্বিক সচেতনতা, সমমর্মিতা প্রত্যেক মানুষের কাছেই কাম্য।

ডা. এম এ হামিদএমবিবিএস, এফসিপিএস
সহযোগী অধ্যাপক
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।

চেম্বার
১.  ডিফাম হসপিটাল
বাড়ি নং-১৬, রোড নং-১৬ (পুরাতন-২৭)
জেনেটিক প্লাজা (৪র্থ তলা) ধানমণ্ডি, ঢাকা
 ফোন : ৮১৫৩৩০১

২.  টাঙ্গাইল ক্লিনিক
ময়মনসিংহ রোড, টাঙ্গাইল।
ফোন : ০১৭১৮৯১৪২৪২